শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
spot_img
শিরোনাম

কর্ণফুলীতে প্রশাসনের নজরধারী নেই , লালচান্দা বলে বিষাক্ত পিরানহা বিক্রি

কর্ণফুলী প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার পুরাতন ব্রিজঘাট বাজারে লালচাঁদা মাছ হিসেবে প্রতিদিন ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে নিষিদ্ধ ও বিষাক্ত পিরানহা মাছ। দাম কম বলে নিম্নআয়ের মানুষের কাছে এসব মাছের চাহিদা একটু বেশি।

এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসাধু মাছ বিক্রেতারা ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন নিষিদ্ধ পিরানহা। সরেজমিনে ব্রিজঘাট মাছ বাজারে এসব দৃশ্য দেখা গেছে। স্থানীয় খুচরা মৎস্য ব্যবসায়ীরা পিরানহা মাছকে সামুদ্রিক লালচাঁদা মাছ হিসেবেই বিক্রয় করে থাকেন।

এ পিরানহা মাছ সাধারণত দুই প্রকার। ব্ল্যাক বেলি পিরানহা (কালো পেটওয়ালা) ও রেড বেলি পিরানহা (লাল পেটওয়ালা)। এ মাছের প্রধান আবাসস্থল দক্ষিণ আমেরিকা, ব্রাজিলসহ কয়েকটা দেশের নদীতে। সম্প্রতি, বাংলাদেশেও এ মাছ পাওয়া যাচ্ছে।

এ মাছ একটি হিংস্র এবং রাক্ষুসে মাছ। সারা বিশ্বে মানুষখেকো মাছ হিসেবে পরিচিত পিরানহা মাছের মানুষের প্রথম আঘাতের স্থান পায়ের আঙ্গুল। তিন ধরনের শব্দ উৎপন্ন করার মাধ্যমে এদের নিজস্ব একটা ভাষা আছে। জলাশয় বা নদীর অন্যান্য মাছ সমূলে ধ্বংস করে।

ক্ষুধার্ত থাকার সময় এক পিরানহা আরেক পিরানহা মাছকেও খেয়ে থাকে। ধারালো দাঁত আর প্রায় মানুষের মতো জিহ্বা থাকার কারণে সে তার লক্ষ্যবস্তুতে শরীরের ১০ গুণ বেশি শক্তিতে কামড় দিতে সক্ষম।

মৎস্য গবেষকরা বলেছেন, ৩০টি পিরানহা মাছ একটি হরিণকে খেতে সময় নেয় মাত্র ১ ঘণ্টা। এ মাছের এমন কিছু বিষক্রিয়া আছে যা আমাদের পাকস্থলি বিনষ্ট করার প্রধান হাতিয়ার। এক বোতল অ্যালকোহলের চাইতেও এ মাছের ৫০ গ্রাম ওজনের একটি অংশ বেশি ক্ষতিকর।

জানা যায়, রাক্ষুসে স্বভাবের কারণে বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশ সরকারও পিরানহা মাছের উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করেছে। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পিরানহা মাছ চাষ, উৎপাদন, পোনা উৎপাদন, বংশ বৃদ্ধি, বাজারে বিক্রি এবং বাজার থেকে ক্রয় সরকারীভাবে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়।

পিরানহা মাছের চর্বি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে। এ মাছে থাকা ফসফেট আমাদের মূত্র প্রদাহ সৃষ্টি করে, নব বিবাহিত নারীর বন্ধ্যত্ব সৃষ্টির অন্যতম কারণ। প্রস্রাবের সঙ্গে শরীর থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যালসিয়াম ও রক্ত বের করে দেয়। পিরানহা মাছ খেলে মানসিক সমস্যাসহ মানুষের দেহে নানান রোগের সৃষ্টি করে।

ইবনে সিনা হাসপাতালের ডা. আবু তৈয়ব বলেন, আমাদের চট্টগ্রামে মূলত রেড বেলি পিরানহা মাছ বেশি পাওয়া যায়। একটি অসাধু চক্র এই মাছ বিক্রির পেছনে দায়ী। সরকার এ মাছকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

ব্রিজঘাটের মাছ ব্যবসায়ি সালা উদ্দিন ও তৈয়ব মিয়া বলেন, এ মাছের চাহিদার ফলে আমরা মাছ বিক্রি করছি। নিষিদ্ধ ও বিষাক্ত কিনা জানি না। তবে গরিব মানুষেরা ১৫০ টাকা কেজিতে এ মাছ কিনে খেতে পারে। অন্যান্য মাছের চেয়ে এটি সস্তা।

কর্ণফুলী উপজেলা মৎস্য অফিসার স্বপন চন্দ্র দে
বলেন, আমি উপজেলায় আছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করব।

- Advertisement -spot_img
spot_img

সর্বশেষ