ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি পণ্যবাহী এমভি আবদুল্লাহ নামে একটি জাহাজ আটক করেছে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। জাহাজটিতে ২৩ জন নাবিক ও ক্রু রয়েছেন। জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজটি ২৫ দিনের মতো খাবার রয়েছে। এছাড়া জাহাজটিতে বিশুদ্ধ পানি রয়েছে ২০০ টন
জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন। যার নাম এমভি আবদুল্লাহ, পণ্যবাহী জাহাজটি কয়লা নিয়ে ভারত মহাসাগর হয়ে মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। গন্তব্য ছিল দুবাই।
বুধবার (১৩ মার্চ) মালিকপক্ষ জিম্মি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাবিকদের ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘‘ঘটনার পর থেকে প্রথমে নাবিকদের সুরক্ষার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। জলদস্যুরা নাবিকদের কোনো ক্ষতি করেনি। জাহাজে নাবিকদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। ‘‘
এদিকে জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিকউল্লাহ খান এক অডিও বার্তায় মঙ্গলবারই জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের কাছে কী পরিমাণ খাবার ও পানি আছে এসব তথ্য জানিয়েছেন। জাহাজটি জলদস্যু নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর পরই তাদের এ বার্তা পাঠান তিনি।
আতিকউল্লাহ খান অডিও বার্তায় বলেন, আমাদের জাহাজে ২০-২৫ দিনের খাবার আছে। ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি আছে। আর জাহাজে রয়েছে ৫৫ হাজার টন কয়লা। খাবার যাতে দ্রুত ফুরিয়ে না যায়, সে জন্য অপ্রয়োজনে ব্যবহার না করার জন্য সবাইকে জানানো হয়েছে। তবে কবির স্টিলগ্রুপ বলছে, ২৫ দিনের খাবার থাকলেও রেশনিংয়ের মাধ্যমে যা দেড়মাস পর্যন্ত পার করতে পারবেন নাবিকরা।
এ ছাড়া জাহাজটিতে ২০০ টনের মতো বিশুদ্ধ পানি রয়েছে। সোমালিয়ায় জিম্মি থাকা অবস্থায় নতুন করে ফ্রেশ ওয়াটার (বিশুদ্ধ খাবার পানি) যোগ না হলে দুর্ভোগে পড়তে পারেন নাবিকরা। যদিও সোমালিয়ায় গেলে পানির ব্যবস্থা করা নিয়ে আশাবাদি কবির স্টিল গ্রুপ।
মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় জাহাজটিতে উঠে নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা।
জাহাজটির মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাহাজটি নিয়ন্ত্রণে নেয়া কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এখনো জলদস্যুরা যোগাযোগ করেনি। এ হিসেবে মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত এই খাবার দিয়ে চলতে হবে জাহাজের নাবিক ও দস্যুদের।
জানা গেছে, জলদস্যুদের কবলেপড়া বাংলাদেশি জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাঁচার আকুতি জানিয়ে এরইমধ্যে অডিও বার্তা দিয়েছেন তারা।