বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
spot_img
শিরোনাম

২১০ হেক্টর বনাঞ্চলে রোপণ করা হবে ৬ লক্ষ ৩০ হাজার চারাগাছ

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

বন বিভাগের টেকসই বন ও জীবিকা বা সাসটেইনেবল ফরেস্ট অ্যান্ড লাইভলিহুডস (সুফল) প্রকল্পের আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সবুজায়ন হচ্ছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ার ৪টি বিট নিয়ে গঠিত পদুয়া রেঞ্জের ২১০ হেক্টর বনাঞ্চল। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ২১০ হেক্টর বনাঞ্চলে রোপণ করা হবে বিভিন্ন প্রজাতির ৬ লক্ষ ৩০ হাজার মিশ্র দ্রুত বর্ধনশীল (FGS) চারাগাছ। যার মধ্যে রয়েছে আমলকি, হরিতকি, কদম, শীলকরই, জারুল, কাঞ্জনবাদি, কৃষ্ণচূড়া, পিত্তরাজ, রক্তচন্দন, বক্সবাদাম, গামার, কানাইডিঙ্গা, হলুদ, সি-ভিট, অর্জুন, বহেরা, শিমুলতুলা, আকাশমণি, চিকরাশি, চক্কা করই, বাকাইনসহ বিভিন্ন মিশ্র প্রজাতির চারাগাছ। এরই মধ্যে চারা রোপণের প্রস্তুতি শুরু করেছে পদুয়া রেঞ্জ। তারই অংশ হিসেবে বনাঞ্চলের আগাছা পরিষ্কারের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন অপেক্ষা শুধুমাত্র চারা রোপনের।

পদুয়া রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা যায়, ওই রেঞ্জের অধীনে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় ৪টি বিট রয়েছে। বিটগুলো হলো- বড়দুয়ারা বিট কাম চেক স্টেশন, ডলু বিট, হাংগর বিট ও টংকাবতী বিট। বড়দুয়ারা বিট কাম চেক ষ্টেশনের ৪০ হেক্টর বনাঞ্চলে রোপণ করা হবে ১ লক্ষ ২০ হাজার চারা, ডলু বিটের ৮০ হেক্টর বনাঞ্চলে রোপণ করা হবে ২ লক্ষ ৪০ হাজার চারা, হাংগর বিটের ৪০ হেক্টর বনাঞ্চলে রোপণ করা হবে ১ লক্ষ ২০ হাজার চারা ও টংকাবতী বিটের ৫০ হেক্টর বনাঞ্চলে রোপণ করা হবে ১ লক্ষ ৫০ হাজার চারা। সর্বমোট ২১০ হেক্টর বনাঞ্চলে ৬ লক্ষ ৩০ হাজার মিশ্র প্রজাতির চারা রোপণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বনায়নের জন্য এরইমধ্যে প্রতিটা বিটে নিজস্ব পদ্ধতিতে নার্সারি গড়ে তোলা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালে ৫ বছর মেয়াদি বন অধিদপ্তরের টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। এক হাজার ৫০২ কোটি টাকার এ প্রকল্পে সরকার ৩২ কোটি ৭২ লাখ টাকা অর্থায়ন করেছে। বাকি টাকা ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই প্রকল্পের আওতায় আছে পাঁচটি বনাঞ্চল এবং ৮ বিভাগের ২৮ জেলার ১৬৫টি উপজেলার ৬০০ গ্রাম। প্রকল্পের উদ্দেশ্য অনুযায়ী বৃক্ষ উজাড় হওয়া প্রাকৃতিক বনগুলোর খালি জায়গা, রাস্তার ধার ও নতুন চরে গাছ লাগানো। এছাড়াও রয়েছে বনায়ন ও বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসন, বিপন্ন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, বিপন্ন প্রজাতির গাছপালার তালিকা তৈরি ও বননির্ভর পরিবারগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটানোর উদ্যোগ গ্রহণ।

বড়দুয়ারা বিট কাম চেক ষ্টেশন কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সুফল প্রকল্পের আওতায় বড়দুয়ারা বিট ষ্টেশনের ৪০ হেক্টর বনাঞ্চলে চারা রোপণের সকল কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। চিতামুড়া এবং বিট ষ্টেশনের কাছেই দুটি নার্সারি গড়ে তোলা হয়েছে। পাহাড়ের আগাছা পরিষ্কার করে চারা রোপণের তৈরি করা হচ্ছে। শীগ্রই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী চারাগুলো রোপণ করা হবে।

 

পদুয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের আওতায় বননির্ভর পরিবারগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে ইতোপূর্বে বিভিন্ন এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন ও বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হয়েছে। এবার ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের একই প্রকল্পের আওতায় বনায়ন করা হচ্ছে। সবুজায়নের লক্ষ্যে প্রতিটা বিটে নিবিড় পরিচর্যা ও তদারকির মাধ্যমে নার্সারি গড়ে তোলা হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ৪টি বিটের মোট ২১০ হেক্টর বনাঞ্চলে চারা রোপণের কার্যক্রম শুরু হবে। ফলে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে অপরদিকে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল গড়ে উঠবে।

- Advertisement -spot_img
spot_img

সর্বশেষ