হাটহাজারীতে রাতের আঁধারে কৃষিজমির টপসয়েল কাটা হচ্ছে, জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে, কোথাও চলছে ছড়া দখল। যে যেভাবে পারছে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, যেন মাটি কাটা, খাল ও ছড়া দখলের মহোৎসব চলছে। উপজেলা প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করলেও তাতে কোনো সুফল আসছে না। যে সব অভিযোগে নামমাত্র জরিমানা নেওয়া হচ্ছে, তা মাটি খেকো কিংবা দখলবাজদের একদিনের উপার্জন মাত্র। প্রশাসন যদি সর্বোচ্চ শাস্তি আরোপ করে, তাহলে অপরাধীরা দমতে পারে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ইসলামিয়াহাট বাদামতল এলাকার চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের ব্রিজের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া বালুখালি খালের মুখটিও দখলে চলে গেছে। হাটহাজারী থেকে নগরে যেতে হাতের বাম পাশের খালটির উত্তর পাড়ে মাটি ফেলে টেকসই করতে সপ্তাহ ধরে চলছে গাছের খুঁটি (বল্লি) স্থাপনের কাজ। বল্লি পুঁততে ব্যবহার করা হচ্ছে ইলেকট্রিক মেশিন, যা ভবন নির্মাণে পাইলিং করার মতোই দৃশ্যমান। জানা গেছে, এলাকার খোকন সরদার এই কাজটি করছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, এটি খাল দখলের জন্য নয়, বরং সম্পূর্ণ নিজের মালিকানাধীন জায়গায় ভাঙন রোধে গাছের খুঁটি বসানো হচ্ছে।
তবে এলাকাবাসীর বক্তব্য ভিন্ন। তারা জানান, খালের প্রশস্ততা দিন দিন কমে আসছে। বিশ থেকে পঁচিশ ফুটের খালের মুখ এখন মাত্র পাঁচ-ছয় ফুটে নেমে এসেছে। খুব শিগগির খালের শেষাংশ থেকে খননের কাজ শুরু হবে বলে বিএডিসি জানিয়েছে। এতে জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ইরি ধানের চাষাবাদ পুনরায় শুরু করা যাবে।
সামনে বর্ষা মৌসুম, এই মুহূর্তে খালের মুখ সংকুচিত হলে এলাকাবাসীকে আবারও দুর্ভোগে পড়তে হবে। এর আগেও বিভিন্ন সময় খালটির বিভিন্ন অংশ দখল হয়ে গেছে, কিন্তু দখলদারদের উচ্ছেদে প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
ফতেপুর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মুছা জানান, বিকালেই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, “সরকারি কিংবা মালিকানাধীন খালের মুখ সংকোচন করা যাবে না। আমরা দ্রুত পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”