চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে বসবাস করে প্রায় আশি হাজার পরিবার। শান্তির এই দ্বীপে মাঝে মাঝে অশান্তির ছায়া নেমে আসে।
সম্প্রতি সন্দ্বীপে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে সম্পত্তি ও দখলদারিত্বকে কেন্দ্র করে রিপাত নামের এক দশম শ্রেণির ছাত্র এবং ভূয়া কবিরাজের প্ররোচনায় মিনারা নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন। এই ঘটনাগুলো ঘিরে এলাকায় শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
গত ২১ মে সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে খাল দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত হয় দশম শ্রেণির ছাত্র রিপাত (১৬)। রিপাত মগধরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও বিএনপি নেতা জামসেদের ছেলে। এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে রিপাতের বাবা বলেন, “আমার ছেলেকে সারিকাইতের রাজু ও আলমগীর দলবল নিয়ে খুন করেছে খাল দখলে বাধা দেওয়ায়। আমি তাদের উপযুক্ত বিচার চাই।” এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপির নেতারা এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দোষারোপ করে আসছে।
রিপাত হত্যাকাণ্ডে তার বাবা জামসেদ মেম্বার বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। এই বিষয়ে বিএনপির সদস্য সচিব আলমগীর ঠাকুর বলেন, “এটি আসলে একটি অপ্রত্যাশিত খুন। এর আসল কারণ খুঁজে বের করতে সাংগঠনিকভাবে তদন্ত চলছে। যারা দোষী প্রমাণিত হবে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক নিয়মে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
অন্যদিকে, ২৮ মে মুছাপুর ইউনিয়নের সুরমা পাটোয়ারীর বাড়িতে মিনারা (৩২) নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন। মিনারার রয়েছে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী, বড় ছেলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র, ছোট মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে, আর ছোট ছেলের বয়স মাত্র ৪ বছর। তার স্বামী আলমগীর আনসার ভিডিপিতে চাকরি করেন। এই খুন নিয়ে রয়েছে নানা রহস্য। এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, ভূয়া কবিরাজ মাঈন উদ্দিনের প্ররোচনায় খুন হন মিনারা। মাঈন উদ্দিন কবিরাজি চিকিৎসার জন্য মিনারার কাছ থেকে স্বর্ণ নিয়ে যান। বারবার ফেরত চাইলে দিতে না পারায় মিনারাকে খুন করা হয়।
মিনারার স্বামী আলমগীর জানান, “ভুয়া কবিরাজ মাঈন উদ্দিন আমার স্ত্রীকে খুন করেছে। আমি থানায় মামলা করেছি এবং তার ফাঁসি চাই।”
এই দুটি ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সন্দ্বীপ থানা অফিসার ইনচার্জ সফিকুল আলম ভূঁইয়া জানান, “রিপাত হত্যায় মামলা হয়েছে এবং একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মিনারা হত্যায় মাঈন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”