বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
spot_img
শিরোনাম

মাইজভাণ্ডার শরিফে আউলিয়ায়ে কেরামের শিক্ষা ও দর্শন নিয়ে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহ্ সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র ১১৯তম ‘মহান ১০ মাঘ উরস শরিফ’ উপলক্ষে মাইজভাণ্ডার শরীফ ‘দরবার-ই গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী’র গাউসিয়া হক মঞ্জিল-এর ব্যবস্থাপনায় ‘মাইজভাণ্ডার শরিফ শাহী ময়দান’-এ ষষ্ঠ “তাযকেরা-এ-চেরাগে উম্মতে আহমদী (দঃ) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত মাহফিলের সভাপতিত্ব করেন, মাইজভাণ্ডার শরিফ দরবারে গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক মঞ্জিল’র সাজ্জাদানশীন ও ‘শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্টের ম্যানেজিং ট্রাস্টি শাহ্ সুফি সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভাণ্ডারী (মা.জি.আ.)।

সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রিয় নবী (সা:) এর মূল কাজ কেবল ধন বিতরণ ছিলো, তা ভাবলে ভুল হবে, উনার মূল কাজ ছিলো আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ইলম, হিকমত বিতরণ করা, রহমত বিতরণ করা, রুহানিয়ত বিতরণ করা। আউলিয়ায়ে কেরামগণও তাই করেছেন। যেমন, হযরত কেবলা আলম, বাবাজান কেবলা আলম, শাহানশাহ বাবাজান সারাটা জীবন দিয়ে আমাদের একটাই দর্শন প্র্যাকটিস করিয়েছেন, একটাই দর্শন ডেমনস্ট্রেট করিয়েছেন, একটিই রুহানী শিক্ষা দিয়েছেন, উৎসাহ উদ্দীপনা দান করেছেন, শিশুকে শিশুর মতো করে, মায়েদের মায়ের মতো করে, বাবাদের বাবার মতো করে, মুরব্বিদের মুরব্বির মতো করে শিক্ষা দিয়েছেন। রুহানিয়ত শিক্ষা দিয়েছেন এবং মেহেরবানী করেছেন।

তিনি আরও বলেন, দুনিয়াবি কোনো সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে কেউ নিঃসন্তান সন্তান পেতে পারেনি, খোদায়ী এই রহমত তারা (আউলিয়ায়ে কেরাম) বিতরণ করেছেন। তারা দোয়া করেছেন, সেই দোয়া আকাশে কবুল হয়েছে, নিঃসন্তান সন্তানের অধিকারী হয়ে গেছে। এটি আউলিয়ায়ে কেরামের মূল অবদান। সেই বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি দেওয়া দরকার।

হুজুর গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী আমাদের সমাজের যে বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন, ফোকাস করতে বলেছেন, উনি আমাদের কোন রঙে রাঙাতে চেয়েছেন সেটি বুঝার চেষ্টা করাই আমাদের প্রধান কাজ। সেটা আমরা নিজেরা বুঝার চেষ্টা করতে হবে এবং অপরকেও সেটি বুঝানোর চেষ্টা করতে হবে। কারণ আউলিয়ায়ে কেরামগণের দর্শনের বড় বৈশিষ্ট্য হলো, তাঁরা চান, হুববিয়ত এর স্বভাব, হুববিয়ত এর বৈশিষ্ট্য আমরা আমাদের ভিতরে লালন করি, আদব-এহতেরাম এর বৈশিষ্ট্য আমাদের ভিতরে লালন করি, আমরা হুসনে আখলাক অর্জন করি। কারণ এগুলো অর্জন ছাড়া কেউ ইবাদত করলে বিপদের সম্মুখীন হয়ে যাবে।

বেলায়তে মোতলাকা হল একটি ট্রান্সফরমেশন গাইড বুক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি অনুধাবন করার জন্য আমাদের দার্শনিক মন নিয়ে চিন্তা করতে হবে এবং তাহলেই আমরা ভুল বোঝাবুঝির নিরসন ঘটিয়ে নিজের জীবন ও সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন করতে পারব।

মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসা-এ-গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী’র অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আবুল কাছেম। ‘মহান ১০ মাঘ উরস শরিফ’ উপলক্ষে SZHM ট্রাস্টের গৃহীত দশদিন ব্যাপী কর্মসূচি উপস্থাপন করেন উপাধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বোয়ালখালী চরণদ্বীপ দরবারের নায়েবে মোন্তাজেম শাহাজাদা মাওলানা শেখ আবু মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ফারুকী, বোয়ালখালী গোমদণ্ডী দরবারের নায়েবে শাজ্জাদানশীন মাওলানা সৈয়দ আহমদুল হক মাইজভাণ্ডারী, মাদ্রাসা-এ-গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী’র আরবি প্রভাষক মাওলানা মুহাম্মদ মুজিবুল হক মাইজভাণ্ডারী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মাইজভাণ্ডার শাহী জামে মসজিদের সাবেক খতিব আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম ফোরকানী ও খতিব মাওলানা মুহাম্মদ বশিরুল আলম মাইজভাণ্ডারী।

মাহফিলে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি রেজাউল আলী চৌধুরী জসিম, সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান বাবুলসহ অন্যান্য সদস্যগণ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার বিভিন্ন দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। মিলাদ-কিয়াম ও তাওয়াল্লোদে গাউসিয়া পরিচালনা করেন উম্মুল আশেকীন মুনাওয়ারা বেগম এতিমখানা ও হেফজখানার প্রধান হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আবুল কালাম।

- Advertisement -spot_img
spot_img

সর্বশেষ