বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
spot_img
শিরোনাম

নামফলক নিয়ে বিরোধ: চন্দনাইশে সংঘর্ষ ও মসজিদ দখল

নিজস্ব প্রতিবেদক

চন্দনাইশ পৌরসভার সদরস্থ পূর্ব জোয়ারা গ্রামের মৌলানা বাড়ি মসজিদ পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আনজুমান পরিচালিত খানকাহ কাদেরিয়া তৈয়বিয়া তাহেরিয়া কমিটির বিরোধ গত তিন বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি। নামফলক লাগানো নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েকবার সংঘর্ষ এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

গত বছরের ২৫ অক্টোবর নামফলক লাগানোকে কেন্দ্র করে খানকাহ কমিটির কিছু লোকজন মসজিদ পরিচালনা কমিটির লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করে এবং ইমামের রুমে হামলা চালায়। ওইদিন সংঘর্ষে মহল্লার তাহমিদ ও সাজিদ গুরুতর আহত হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মৌলানা বাড়ি জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন জানান, মসজিদের নামে পাঁচ শতক জায়গা রয়েছে এবং তাই মসজিদ কমিটি সাইনবোর্ড দিয়েছে। এ বিষয়ে আনজুমান এ রহমানিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট একাধিকবার দরখাস্ত দিয়েছে, কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে দক্ষিণ জেলা গাউছিয়া কমিটির সাবেক সভাপতি ও আনজুমান এ রহমানিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ফাইন্যান্স সেক্রেটারি কমর উদ্দিন সবুর জানান, চন্দনাইশ সদরস্থ খানকাহ বিরোধ সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। উপজেলা ভূমি অফিস থেকে জমির পরিমাপের পর বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

মহল্লা কমিটির সদস্য রবিউল ইসলাম সৌরভ বলেন, উপজেলা ভূমি অফিস থেকে বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষকে জমি পরিমাপের জন্য ২৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে নোটিশ দেওয়া হয়। তবে বিবাদী পক্ষ কোনো সাড়া না দেওয়ায় পরিমাপ স্থগিত হয়ে যায়। খানকাহ কমিটির অসহযোগিতার কারণেই বিরোধটি নিষ্পত্তি হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

রবিউল আরও বলেন, মসজিদ পরিচালনা কমিটি এবং মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে বিষয়টি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সমাধানের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি এবং সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

মহল্লার সদস্য আবদুল হালিম জানান, বিগত দশ বছর ধরে মহল্লাবাসী মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনসহ যাবতীয় খরচ বহন করে আসছে। তাদের দাবি, মসজিদ পরিচালনা কমিটি সাইনবোর্ড লাগাবে এবং পরিচালনার যাবতীয় দায়িত্ব পালন করবে। খানকাহ কমিটির সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেই। তবে খানকাহ কমিটির কিছু সদস্য এই সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না এবং কোনো সহযোগিতাও করছেন না।

বিরোধের কারণে গত দুই ঈদের নামাজ আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ফলে মহল্লার অনেক মুসল্লি মসজিদে নামাজ আদায় করেন না। স্থানীয় শওকত নামের এক ব্যক্তি জানান, মসজিদ কমিটি এবং খানকাহ কমিটির মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের কারণে অনেকেই মসজিদে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন।

গত ২৫ অক্টোবর সংঘর্ষের পরে খানকাহ কমিটি মসজিদটি দখল করে নেয় এবং পূর্বের ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে বের করে দেয়। স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কিছু লোক বিরোধটিকে আরও জটিল করে তুলছে বলে শওকত অভিযোগ করেন।

- Advertisement -spot_img
spot_img

সর্বশেষ