সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম থেকে কওমি পড়ুয়া শিক্ষকদের আকস্মিক বিদায়ের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাবুনগর মাদরাসার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ফটিকছড়ি উপজেলা কমিটি গঠন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “একটি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষক থাকতে পারে। যদি কেউ কোনো অনিয়ম করে থাকে, তাহলে একাডেমিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কিন্তু একচেটিয়াভাবে একটি নির্দিষ্ট মতের লোকজনকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষের এহেন গর্হিত কাজের আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”
আল্লামা বাবুনগরী আরও বলেন, “কিছুদিন আগে জামাতে ইসলামী ও তাদের আকিদা বিশ্বাস নিয়ে দেওয়া আমার বক্তব্য নিয়ে অনেকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমি যে কথাগুলো বলেছি, সেগুলো আমার একক কোনো মত নয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সকল ওলামায়ে কেরামের সমন্বিত মত হচ্ছে নবী ও সাহাবা সম্পর্কে তাদের আকিদা ভ্রান্ত এবং আহলে সুন্নাতের বিপরীত। এসব কথা আমার নিজস্ব মত বলে বিভ্রান্ত ছড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।”
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরীর সভাপতিত্বে এবং মাওলানা ইয়াহিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাজিরহাট ফারুকীয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম মাওলানা ছলিমউল্লাহ, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা জুনাইদ বিন জালাল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শেখ হুসাইন মুহাম্মদ শাহজাহান ইসলামাবাদী, মাওলানা শামশুল আলম, মাওলানা কারী আবু সাঈদ, মাওলানা মাহমুদ শাহ, মাওলানা আমীরউদ্দিন, মুফতি মুহাম্মদ বাবুনগরী, মুফতি শওকত বিন হানিফ, মাওলানা শহিদুল্লাহ, মুফতি খালেদ, মাওলানা আবু তালেব, সাংবাদিক মাওলানা আসগর সালেহী, মুফতি নুমান, হাফেজ মুজিব, মাওলানা হাবিবুল্লাহ, মাওলানা নিজাম উদ্দীন, মুফতি ওসমান, মাওলানা এজাজ উল্লাহ, মাওলানা ওসমান শাহনগরী, মাওলানা আবুবকর, মাওলানা ইউসুফ আরমান নছীরি, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ আমিনী, মাওলানা নাছির ও মাওলানা রায়হান প্রমুখ।
সভায় উপস্থিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলরা আমীরে হেফাজতের বক্তব্যের সাথে সম্মতি প্রকাশ করে বলেন, “জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত কর্মকাণ্ড হচ্ছে। ধর্মীয় মাহফিলে বাধা দেওয়ার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনাও ঘটেছে।”
উপস্থিত ফটিকছড়ির শীর্ষ ওলামা প্রতিনিধিরা সিলেটে আমীরে হেফাজতের মাহফিলে বাধা দেওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “আগামীতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, কওমি মাদরাসা বা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা মাহফিলে কোথাও কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ হলে আমরা আমীরে হেফাজত আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর নেতৃত্বে সারাদেশে তীব্র আন্দোলন ও প্রতিবাদ গড়ে তুলবো।”
বৈঠক শেষে মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরীকে আমীর, মাওলানা ছলিমউল্লাহ ও মাওলানা জুনাইদ বিন জালালকে সিনিয়র নায়েবে আমীর এবং মাওলানা ইয়াহিয়াকে সেক্রেটারি করে ৬১ সদস্যবিশিষ্ট হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ফটিকছড়ি উপজেলার কমিটি ঘোষণা করা হয়।