শনিবার, ৭ জুন ২০২৫
spot_img
শিরোনাম

চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে রাঙ্গুনিয়ায় যুবক নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় চোরের অভিযোগে মো. রুবেল (২৭) নামে এক অটোরিকশা ড্রাইভারকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলেছে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে লালানগর ইউনিয়নের ইসলামিয়া পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রুবেল চন্দ্রঘোনা বনগ্রাম এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তার বাড়ি চন্দ্রঘোনা বনগ্রাম হলেও দীর্ঘদিন যাবত সে লালানগর ৫নং ওয়ার্ডে তার শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। পেশায় সে একজন অটোরিকশা চালক বলে জানা গেছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত রুবেল রাত ২টার পরে তার স্ত্রীর বড় ভাইয়ের সিএনজি-অটোরিকশায় জ্বালানি গ্যাস নেওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। গ্যাস নিয়ে আসার পথে লালানগর বন্দেরাজাপাড়া এলাকায় এলে স্থানীয় কয়েকজন তাকে গতিরোধ করে। তার বিরুদ্ধে গত (২৫ ডিসেম্বর) রাতে ধামাইরহাট বাজারে কামরুলের মোবাইলের দোকানে চুরি করে ২ লাখ টাকা ও ৩টি মোবাইল নিয়ে আসার অভিযোগ করা হয়। এসময় রুবেল ঘটনার ব্যাপারে অস্বীকার করলে তাকে লালানগর ইউনিয়ন বিএনপি পার্টি অফিসে নিয়ে যায় এবং ব্যাপক মারধর করে। একপর্যায়ে দু’জনের নাম স্বীকার করলে তাদেরও ধরে এনে মারধর করে। মারধরের একপর্যায়ে রুবেল নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে ওই অবস্থায় রেখে চলে আসে। এদিকে ভোরের দিকে রুবেলের স্ত্রী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তার হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রুবেলকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

এদিকে নিহতের স্ত্রীর বড় ভাই জসিম বলেন, রুবেলকে আমি গ্যাস নিতে পাঠিয়েছিলাম। আসার পথে মরিয়মনগর ডিসি সড়কের শান্তিনিকেতন এলাকা থেকে কয়েকজন গাড়িতে ওঠে। তারা বন্দেরাজাপাড়া এলাকায় এলে গাড়িতে থাকা কয়েকজনসহ স্থানীয়রা মিলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর পর্যন্ত দীর্ঘক্ষণ মারধরের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি জানান, নিহত রুবেলের প্রকৃত বাড়ি ফেরিঘাট, মা-বাবা নেই। ছোট থেকেই বনগ্রামে পালক সন্তান হিসেবে বড় হয়েছিল। গত ৯ বছর আগে তার বোনকে বিয়ে করে সেখানেই থাকছেন। সংসারে ৬ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে তার। এদিকে তার ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, মৃত মো. রুবেল ইতিপূর্বেও একাধিক চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল। গত দুই মাস আগেও চুরি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছিল। এরপর তার স্ত্রী ও স্ত্রীর বড় ভাই মো. জসিম মুচলেকা ও জরিমানা দিয়ে স্থানীয় সালিশ থেকে নিয়ে গিয়েছিল।

এই বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া থানার (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম জানান, “আমরা সকালে ঘটনাটির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার লাশ দেখি, পরে তার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

- Advertisement -spot_img
spot_img

সর্বশেষ