চর বরমার বালু স্তুপের বিরোধের জের ধরে গত ১০ মার্চ চন্দনাইশ থানায় চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করা হয়। সে মামলায় বিএনপি নেতা মোজাম্মেল হককে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের প্রতিবাদে গতকাল ১২ মার্চ দুপুরে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
জেলার সাঙ্গু ও ডলু নদীর ড্রেজিং এবং তীর কার্যক্রমের আওতায় চর বরমা এলাকায় স্তুপকৃত বালু নিয়ে ২টি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে উভয় দলের পক্ষ থেকে চর বরমা এলাকায় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করা হয়। জমির মালিকদের নিয়ে গত ৯ মার্চ চর বরমা এলাকায় টিকাদারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে স্থানীয়রা। সে মানববন্ধনে স্থানীয় ২ এলডিপি নেতাসহ ৩ জন নেতার নাম উল্লেখ করে বক্তব্য রাখেন প্রতিবাদীরা। পরদিন ১০ মার্চ একই স্থানে এলডিপির পক্ষ থেকে মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। ফলে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। পরবর্তীতে গত ১০ মার্চ টিকাদার নুরুল আমিন বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে চন্দনাইশ থানায় চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। সে মামলার এজহার নামীয় ২নং আসামী বিএনপি নেতা মো. মোজাম্মেল হককে গত ১১ মার্চ দিবাগত রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের প্রতিবাদে গতকাল ১২ মার্চ দুপুরে বরমা ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে চর বরমা এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচনায় অংশ নেন বিএনপি নেতা যথাক্রমে সামশুদ্দীন মেম্বার, শহিদুল ইসলাম খাঁন, মো. সেলিম উদ্দীন, কামাল উদ্দীন, নূর খাঁন, মো. ইলিয়াছ, মো. তামীম প্রমূখ।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সাঙ্গু ও ডলু নদীর ড্রেজিং এবং তীর কার্যক্রমের আওতায় পূর্ব চর বরমা স্তুপ নং-৫’র নিলাম গ্রহণ করেন ১০ লক্ষ ৮৫ হাজার ১৭৫ ঘনফুট বালু নিলামে পান গত ১৩ জুলাই’২৩ সালে কেশুয়ার জনৈক নাঈম উদ্দীন। বন্যার কারণে পরবর্তীতে ২০২৪ সালে নিলামটি বাতিল হয়। একই স্তুপ গত বছর ১৭ অক্টোবর ২ লক্ষ ৮৬ হাজার ৮৭৫ ঘনফুট বালুর স্তুপ-৫ নিলামে পান হাশিমপুরের জনৈক মো. নুরুল আমিন। তিনি নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভ্যাট/ট্যাক্স দিয়ে বালু উত্তোলন করতে গেলে স্থানীয় জমির মালিকদের সাথে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। মালিকদের দাবী তাদের জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বালু রাখলেও দেয়া হয়নি খাজনা। তারা চাষাবাদ করতে না পেরে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। বিধায় তারা বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবরে পৃথক পৃথক লিখিত দাবী জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কোন রকম সমঝোতা না হয়ে বৈঠক শেষ হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিব হোসেন বলেছেন, বিগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম নিয়ম মোতাবেক চর বরমার বালু স্তুপ-৫ নিলাম দিয়েছিলেন। বালু নিয়ে যাওয়ার সময় জমির মালিকদের সাথে নিলাম গ্রহীতার বিরোধ সৃষ্টি হয়। জমির মালিকদের দাবী তাদের জমিতে দীর্ঘ সময় ধরে বালু রাখলেও কোন রকম খাজনা দেয়া হয়নি। এদিকে ইজারা গ্রহীতার আদেশে খাজনা দেয়া সম্পর্কে কোন রকম ব্যখ্যা নেই। তাই পক্ষদয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। তবে সরেজমিনে তদন্ত করে ইজারাদার যে পরিমাণ বালুর নিলাম পেয়েছে তার বেশি কোনভাবে নিতে দেয় হবে না বলে জানান।