ট্টগ্রামের চন্দনাইশে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে জেলা প্রশাসকের অনুমতি না পেয়েই। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে কোটি টাকার এ মেলা। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সংলগ্ন গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের জমিতে চারপাশে টিন দিয়ে ঘেরা মাঠে গড়ে তোলা হয়েছে স্টল ও তোরণ। তোরণের দুই পাশে রয়েছে টিকিট কাউন্টার, যেখানে মেলায় প্রবেশের জন্য জনপ্রতি ১০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
মেলায় বসানো হয়েছে অর্ধশতাধিক স্টল, করা হয়েছে লাইটিং, সার্কাস, বিভিন্ন রাইডসহ জমজমাট বেচাকেনার ব্যবস্থা। তবে এ আয়োজনের জন্য সরকারি খাল ভরাট করা হয়েছে, যা বৃষ্টির সময় এলাকা প্লাবিত করার আশঙ্কা তৈরি করেছে এবং মহাসড়কে যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। মেলা মাঠের পাশে রয়েছে হাশিমপুর মকবুলিয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা, যার পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা যায়, ‘পায়রা’ নামক সংগঠনের ব্যানারে আলী ইমরান নামের এক ব্যক্তি মার্চ মাসের শুরুতে জেলা প্রশাসকের কাছে মেলার অনুমতির জন্য আবেদন করেন। তবে অনুমতি না পেলেও তিনি মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে মেলা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে—আলী ইমরানের পেছনে কারা রয়েছে?
আলী ইমরান দাবি করেন, জেলা প্রশাসক অনুমতি দিয়েছেন, তবে অনুমতির কাগজ চাইলে তিনি বলেন জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।
এ বিষয়ে চন্দনাইশ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আনোয়ার চৌধুরী বলেন, এসএসসি পরীক্ষার সময় কলেজ, মাদ্রাসা ও মহাসড়কের পাশে এমন অনুমতিহীন মেলা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। তিনি দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
চন্দনাইশ থানার ওসি মো. নুরুজ্জামান বলেন, আয়োজক কর্তৃপক্ষ অনুমতির কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তবে কোনো সমস্যা হলে দায় পুলিশের ওপর পড়বে বলে মেলায় একটি পুলিশ টিম নিয়োজিত রয়েছে।
সরকারি কলেজের জায়গায় মেলা বসানো নিয়ে গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ রনজিৎ কুমার দত্তের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. সুব্রত বরণ বড়ুয়া নিশ্চিত করেন, মেলার মাঠ কলেজের জমি।
চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিব হোসেন জানান, আয়োজক জেলা প্রশাসকের কাছে অনুমতির আবেদন করেছে এবং তিনি বিধিমতো রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। তবে এখনো অফিসিয়াল অনুমতির কপি তার হাতে আসেনি।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম স্পষ্ট করে বলেন, “এরা একটি দুষ্টচক্র। এ ধরনের কোনো মেলার অনুমতি জেলা প্রশাসন দেয়নি।”