রেলওয়ে জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (আরজেএ) আয়োজিত বার্ষিক বনভোজন উপলক্ষে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে (কক্সবাজার) নবীন-প্রবীণ সাংবাদিকদের উপস্থিতি যেন মিলনমেলায় রূপান্তরিত হয়েছে। কক্সবাজারের পাটুয়ার টেক সি বিচ, কলাতলী সি বিচ, লাবণি পয়েন্ট সি বিচ, সুগন্ধা বিচ এবং ইনানী বিচসহ বিভিন্ন পয়েন্টে দুই দিনব্যাপী উৎসবে মাতিয়েছেন বিভিন্ন মিডিয়ায় কর্মরত একঝাঁক পেশাদার সাংবাদিক।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, দৈনিক সকালের সময়-এর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান এস এম পিন্টুর নেতৃত্বে ৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে নগরীর টাইগারপাস থেকে পিকনিক স্পটের উদ্দেশে আরজেএ-এর সদস্যদের নিয়ে প্রথম গাড়িটি কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঠিক ২৫ মিনিট পরে নগরীর মুরাদপুর থেকে দ্বিতীয় গাড়িটি পিকনিক স্পটের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।
আরজেএ লোগো সম্বলিত সাদা টি-শার্ট পরে গল্প, কবিতা, গান আর আড্ডায় দুটি গাড়ি মাতিয়ে রাখেন সংগঠনের সদস্যরা। তবে প্রতিটি আনন্দঘন মুহূর্তে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলমকে মিস করেছে বনভোজন আয়োজন কমিটি ও সদস্যরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বনভোজনের গাড়ি দুটি থামে চকরিয়ায়, যা ছিল প্রথম বিরতি। হালকা নাস্তা, ফটোসেশন আর ৩০ মিনিটের আড্ডা শেষে গাড়ি দুটি আবার ছুটে চলে পিকনিক স্পটের দিকে।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পৌঁছে যায় গন্তব্যে। এরপর ওয়াল্ডবিচ রিসোর্টে যার যার কক্ষ বুঝে নেন আরজেএ-এর সদস্যরা। ফ্রেশ হয়ে দুপুর দেড়টার সময় মধ্যাহ্নভোজের জন্য সাংবাদিকরা আবারও মিলিত হন তারকামানের একটি হোটেলে। খাবারের মেনু হিসেবে পছন্দের তালিকায় ছিল হরেক রকমের মজাদার খাবার, যার যার পছন্দ অনুযায়ী মেনু নির্বাচন করেন তারা।
খাওয়া-দাওয়ার পর শুরু হয় দর্শনীয় স্থান পরিদর্শনের পালা। দুটি গাড়ি প্রথমে ছুটে চলে বাংলাদেশের প্রথম আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের দিকে। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে গাড়ি দুটি থামে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে। সাংবাদিকরা দলবেঁধে স্টেশনটি ঘুরে দেখেন, তথ্য সংগ্রহ করেন এবং ফটোসেশনের মাধ্যমে স্মৃতিগুলো ধরে রাখেন।
এর মধ্যে সময় হয়ে যায় সূর্যাস্তের। পশ্চিম আকাশে সূর্য লাল আভা ছড়িয়ে ডুব দেওয়ার মুহূর্তটি যেন মিস না হয়, সেজন্য গাড়ি দুটি আবার ছুটে যায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দিকে। ১৫ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যায় গন্তব্যে।
বৈকালিক নাস্তা শেষে বালিপথ মাড়িয়ে সৈকতের কাছে এসে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন গণমাধ্যমকর্মীরা। ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনে ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে সময় কাটান তারা।
বনভোজন স্পটে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে আরজেএ-এর সদস্যরা ফটোসেশন এবং ঘোরাঘুরি করেন। এই সময় তারা সৈকতে দায়িত্বরত প্রশাসন এবং পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করেন।
সন্ধ্যার পর হোটেলে ফিরে কিছুটা বিশ্রাম নেন সবাই। রাতে বিখ্যাত আল গণি রেস্তোরাঁয় ডিনার শেষে প্রথম দিনের আনন্দ আয়োজন শেষ করেন।
পরদিন সকালে নাস্তার পর ইনানী বিচসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করেন। মেরিন ড্রাইভ রোড ধরে দরিয়া নগর, হিমছড়ি ঝর্ণা ও পাহাড়, ইনানী রয়েল রিসোর্টসহ বিভিন্ন পিকনিক স্পটে ঘুরে বেড়ান।
শেষে বনভোজন আয়োজন কমিটির পক্ষ থেকে প্রত্যেক সদস্যকে উপহার প্রদান করা হয়। এর মাধ্যমে ২০২৫ সালের বনভোজন সফলতার সঙ্গে শেষ হয়।