বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
spot_img
শিরোনাম

আ’লীগের দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে মারামারিতে আহত ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এমপির একটি সড়ক উদ্বোধনের প্রাক্কালে ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় দুই আওয়ামী লীগ নেতার অনুসারীদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চেয়ারম্যানসহ অন্তত ৪-৫  জন আহত হয়েছে বলে উভয় পক্ষ দাবী করছেন।

গতকাল (সোমবার) দুপুরে উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড গুরিগুরি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন, কাঞ্চনা ইউনিয়ন (ইউপি) পরিষদের চেয়ারম্যান রমজান আলী, তাঁর  ছেলে মো.আরমান, মো.আরকান, মো.মিনহাজ ও মাহমুদুল হক। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত মাহমুদুল হককে হাসপাতালে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল (সোমবার) দুপুরে কাঞ্চনা ইউনিয়নের ফুলতলা-মনুফকিরহাট সড়ক কার্পেটিং কাজের উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুতি চলছিল। স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব  উপস্থিত হওয়ার অন্তত ৫ মিনিট আগে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী পরিষদের সদস্য ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান, স্থানীয় চেয়ারম্যান, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল আলম ও মোহাম্মদ ছালামসহ তাদের অনুসারীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে নাম ফলকের স্থান থেকে আবদুল আলম চেয়ারম্যান রমজান আলীর এক অনুসারীকে সরে যেতে বললে উভয় পক্ষের লোকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান রমজান আলী আলমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আলম এ দিন দিন নয়, আরও দিন আছে’।

এ কথা বলার পর উভয়পক্ষের অনুসারীরা মারামারিতে লিপ্ত হয়। এ সময় মোহাম্মদ সালামের প্রবাসী ভাই মাহামুদুল হককে চেয়ারম্যানের লোকজন বাটাম দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করেন। পরে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে ৪ থেকে ৫ জন আহত হন বলে উভয় পক্ষ দাবী করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ এসে ধাওয়া দিলে উভয় পক্ষই সরে যায়। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব, ডা. মিনহাজ, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনজুমান আরা ও স্থানীয় চেয়ারম্যান রমজান আলী উপস্থিত থেকে কার্পেটিং কাজের উদ্বোধন করেন।

এ ব্যাপারে আহত মাহামুদল হক বলেন, সড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমপি মহোদয়ের গুরগুরি আসার খবরে লোকজন নিয়ে আমি অনুষ্ঠানস্থলে যাই। হঠাৎ চেয়ারম্যান রমজান আলীর ছেলে মো. আরমান, মো.আরকান ও ইউপি সদস্য মো. ফরহাদের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন সন্ত্রাসী আমাকে প্রথমে বাটাম দিয়ে পর পর দুইটি মাথায় আঘাত করে।

কিছুক্ষণের মধ্যে এমপি সাহেব চলে আসলে আঘাতের বিষয়টি তাঁকে (এমপি) দেখাতে গেলে পুনরায় ওই সন্ত্রাসীরা আমার উপর হামলা করলে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি।

অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান রমজান আলী বলেন, আলম ও মোহাম্মদ সালামের লোকজন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমি ও আমার লোকজনের উপর হামলা চালায়। এর আগে আলম তার ফেসবুক আইডি থেকে ‘খেলা হবে’ লিখে আমাকে ইঙ্গিত করে একটি পোস্ট দেন। এতে আমার দুই ছেলেসহ কয়েকজন আহত হয়।

এ ব্যাপারে আবদুল আলম তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ  অস্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যান নিজের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে  ঘটনা ঘটিয়ে আমার উপর দোষ চাপাচ্ছে। এ সন্ত্রাসী হামলায় আমার বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে।

এ ব্যাপারে মোহাম্মদ সালাম বলেন, চেয়ারম্যান সড়ক উদ্বোধনের আগেই পরিকল্পনা করে আমার ভাইয়ের উপর সন্ত্রাস হামলা চালিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

উল্লেখ্য, বিগত সংসদ নির্বাচন থেকে চেয়ারম্যান রমজান আলী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল আলম ও মোহাম্মদ সালামের মধ্যে দ্বন্ধ শুরু হয়। এ দ্বন্ধের মধ্যে উভয়েই মুখোমুখি হয়নি এতদিন। গতকাল সড়ক উদ্বোধনের সময় উভয়েই একত্রিত হলে পূর্বের রেশের বহিঃ প্রকাশ ঘটে বলে স্থানীয় অনেকেই দাবী করেছেন।

সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কাঞ্চনায় চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে মারামারিতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব বলেন, কারো সাথে ব্যক্তিগত দ্বন্ধের কারণে সরকারের উন্নয়ন কাজ বসে থাকবে না। এ দ্বন্ধ উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে না।

- Advertisement -spot_img
spot_img

সর্বশেষ