চট্টগ্রাম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক ওয়ার্ড হচ্ছে আন্দরকিল্লা। আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড বিএনপি মানেই সৈয়দ আবুল বশর। গত ১৭ বছর ধরে বিএনপির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি শত শত দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। দলীয় কর্মসূচি পালনের সময় তাকে মামলা, হামলা, জেল-জুলুম ও নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
সৈয়দ আবুল বশর একজন ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। তিনি বদরপাটি হযরত বদর শাহ (রহ.) এর মাজারের মোতাওয়াল্লী এবং টেরীবাজারের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে সুপরিচিত।
আন্দরকিল্লা এলাকার আপদ-বিপদে তার ডাকে শত শত মানুষ রাজপথে নেমে দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে। তবে সম্প্রতি ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড বিএনপির নতুন কমিটি থেকে তাকে বাদ দেওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
নেতা-কর্মীদের মতে, সৈয়দ আবুল বশর ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান ও ত্যাগী নেতা হওয়া সত্ত্বেও তাকে বাদ দিয়ে যারা সদস্য সচিব ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন, তারা কেউই স্থানীয় নন। এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের চেনেন না। এ ধরনের সিদ্ধান্তে যুবদল, ছাত্রদলসহ তৃণমূল নেতা-কর্মীরা রাজনীতি থেকে নিরব থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
তাদের দাবি, সৈয়দ আবুল বশরের মতো পরীক্ষিত নেতাদের অবহেলা করা হলে আগামী সংসদ ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে। তারা বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং এলাকায় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে বিএনপির রাজনীতি প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
এই বিষয়ে তারা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের প্রতি বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানান।
আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক আলাউদ্দীন আলী নূর বলেন, “সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবুল বশর একজন দক্ষ সাংগঠনিক ও জনপ্রিয় মানুষ। তাকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি সাধারণ নেতা-কর্মীরা মেনে নিতে পারছে না। রাজনীতি এবং দলের প্রয়োজনে তাকে দরকার।”
সৈয়দ আবুল বশর বলেন, “কমিটিতে আমার নাম না থাকায় আমার চেয়ে পুরো আন্দরকিল্লাবাসী বেশি হতাশ হয়েছে। আমার কোনো পারিবারিক মামলা নেই। আমি রাজনীতি করতে গিয়ে ২৪টি মামলার শিকার হয়েছি। প্রতিটি বড় মিছিল আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড থেকেই হয়েছে। আমাকে কোন অপরাধে বা অবহেলায় বাদ দেওয়া হয়েছে জানি না। সিনিয়র নেতারা যেটা ভালো মনে করেছেন, সেটাই করেছেন—এখানে আমার কিছু করার নেই।”